ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪ , ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

​৮ দাবিতে শহীদ মিনারে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার গণসমাবেশ

স্টাফ রিপোর্টার
আপলোড সময় : ০২-১১-২০২৪ ০৯:২০:৪৪ অপরাহ্ন
আপডেট সময় : ০২-১১-২০২৪ ০৯:২০:৪৪ অপরাহ্ন
​৮ দাবিতে শহীদ মিনারে সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চার গণসমাবেশ ​সংবাদচিত্র : ফোকাস বাংলা নিউজ
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার অনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তি চুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দফা দাবি জানিয়েছে দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন 'সংখ্যালঘু ঐক্যমোর্চা।' 
শনিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংখ্যালঘু ঐক্য মোর্চার পক্ষ থেকে গণসমাবেশ ও মিছিল শেষে এ দাবি করা হয়।
গণসমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ ও খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি ড. নির্মল রোজারিও। তিনি অভিযোগ করেন, সনাতন ধর্মবিশ্বাসী সংগঠন আন্তর্জাতিক শ্রীকৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘের (ইসকন) সংগঠক চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীসহ (চিন্ময় প্রভু) ১৯ জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করা হয়েছে। ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রানা দাশগুপ্তের নামেও মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ওই সব মামলা বাতিল না করা হলে লাগাতার আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে।
হামলা-মামলা ও নির্যাতনের ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসকন বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদক চারু চন্দ্র ব্রক্ষ্মচারী বলেন, ‘সারা দেশে সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন হচ্ছে। বাড়িঘর দোকানপাট লুটপাট হয়েছে। সরকারের প্রশ্রিুতি সত্ত্বেও তাদের মধ্যে আতঙ্ক কাটেনি। কিন্তু সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ তো দূরের কথা, নির্যাতন নিপীড়ন যে হচ্ছে, সেটাই স্বীকার করছে না। বরং ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি করা হচ্ছে। সেটা হলে সারা বিশ্বে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটির সভাপতি জয়ন্ত কুমার দেব বলেন, ‘সোনার বাংলাদেশে আমরা ভালো নেই। আমরা চেয়েছিলাম অধিকার, হয়ে গেল এজাহার। আন্দোলন বন্ধে মামলা-হুমকি দেওয়া হচ্ছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে এই শহীদ মিনারে আমরাও ছিলাম। কিন্তু তিন কোটি সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ দফা না মালনে বৈষম্যহীন দেশ গঠন সম্ভব নয়। তাই দাবি মানতে হবে।’ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, জাতীয় সংখ্যালঘু কমিশন ও সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠন, জনসংখ্যার অনুপাতিক হারে সংসদে প্রতিনিধিত্ব, পার্বত্য শান্তিচুক্তির যথাযথ বাস্তবায়নসহ ৮ দাবিতে আয়োজিত ওই সমাবেশে দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
গণসমাবেশে আরো বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বাসুদেব ধর, অধ্যাপক ড. নিম চন্দ্র ভৌমিক, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সাধারণ সম্পাদক ড. এম কে রায়, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ভিক্ষু সুনন্দ বড়ুয়া, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হেমন্ত কোরাইয়া, সনাতন পার্টির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সুমন কুমার রায়, জাতীয় হিন্দু মহাজোটের নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে, ছাত্র ঐক্য পরিষদের সমন্বয়ক দীপক কুমার শীল প্রমূখ।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট দেশের পটপরিবর্তনের পর থেকেই, দেশের হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে নানা দাবিতে রাজধানীসহ সারাদেশে আন্দোলন জোরদার করে আসছে তারা।
শনিবারের সমাবেশে সংখ্যালঘুদের ৮ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত সারা দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের পক্ষ থেকে আন্দোলন অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ।
 বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ, বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ, বাংলাদেশ বুদ্ধিস্ট ফেডারেশন, বাংলাদেশ খ্রিস্টান অ্যাসোসিয়েশন, আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ-ইসকনসহ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রায় ৪০টি সংগঠনের নেতাকর্মীরা সমাবেশে যোগ দেন।
 সমাবেশ শেষে জাতীয় পতাকা, ব্যানার, ফেস্টুন, প্ল্যাকার্ড নিয়ে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি দোয়েল চত্বর হয়ে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

বাংলা স্কুপ/প্রতিবেদক/এসকে
প্রিন্ট করুন
কমেন্ট বক্স

এ জাতীয় আরো খবর

সর্বশেষ সংবাদ